Home আন্তর্জাতিক বাংলাদেশে একাধিকবার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা : সুবিধা বাড়ছে ভারতের

বাংলাদেশে একাধিকবার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা : সুবিধা বাড়ছে ভারতের

বাংলাদেশে বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন। সেখানে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিয়ে বছরে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এর সুফল পাচ্ছেন বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা বলে জানিয়েছেন সেখানের মৎস্য দফতরের আধিকারিকরা। তবে, অন্য একটি সমস্যার কথা জানিয়েছেন সেখানের মৎস্যজীবীরা। তাদের দাবি, বাংলাদেশে সাগরে ইলিশ মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার সুবিধা পাচ্ছেন ভারতের মৎস্যজীবীরা। বাংলাদেশে যখন নিষেধাজ্ঞা থাকে তখনও মাছ ধরা হয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। এ কারণে পশ্চিমবঙ্গে বেশি ইলিশ ধরা পড়লেও ভরা মরশুমে বাংলাদেশে কম পরিমাণ ইলিশ কম ধরা পড়ছে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। ভারতের প্রভাবশালী টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা ভার্সন এই এসময় গতকাল এ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইলিশ সুরক্ষা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে বছরে তিনবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অক্টোবরে মা মাছের ডিম ছাড়ার জন্য ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এরপর বাচ্চা হলে তার সুরক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল নিষেধাজ্ঞা থাকে। আবার, মাছের বৃদ্ধির জন্য ২০মে থেকে ২৩জুলাই পর্যন্ত আরও এক দফায় সাগরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা থাকা ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত।
মাছ উৎপাদন : বাংলাদেশে ২০১২-১৩ সালে ইলিশ উৎপাদন হত ৩.৫১লাখ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ সালে ইলিশ উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৫.৭১ লাখ মেট্রিক টন। চলতি বছরে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মৎস্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন মুখ্য বৈজ্ঞানিক আধিকারিক এবং ইলিশ গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘এখন আমরা যে সাফল্য পাচ্ছি, তা এই নিষেধাজ্ঞার ফল।’

আরও পড়তে পারেন-


এই নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে বাংলাদেশের অনেক মৎস্যজীবীর মতে, ভারত এবং বাংলাদেশ মিলিয়ে একটি অভিন্ন সময়ে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা উচিত। এই নিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের মৎস্যমন্ত্রকের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
অভিন্ন সময় নির্ধারণের দাবি : বাংলাদেশে ইলিশের প্রজনন মরশুমে নিষেধাজ্ঞায় সাফল্য দেখে ভারতেও চালু হয়। কিন্তু দুই দেশে সময় আলাদা। চলতি বছরে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ডায়মণ্ড হারবার, দিঘা এলাকায় বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের মাছের উৎস একই। তাই এক অংশে যদি মাছ ধরা বন্ধ থাকে, অন্য অংশে মাছ ধরা বেশি পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
তাই দুই দেশেই মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে একই নিয়ম থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। এখন পশ্চিমবঙ্গে সাগরে মাছ ধরা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনছে বলে মনে করেন চাঁদপুরের কান্ট্রি ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক।
তিনি বলেন, ‘একই সাগর থেকে উভয় দেশের মৎস্যজীবীরা মাছ ধরেন। বাংলাদেশে ইলিশ বন্ধ থাকায় পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। দুই দেশের নিষেধাজ্ঞার সময় যদি মেলানো না যায় তাহলে বাংলাদেশে সমস্যা আরও বাড়বে।’ আনিছুর রহমানের মতে, বাংলাদেশে যে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ নির্ধারণ করেছে, তা ভারতের মানা উচিত।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।