Home ধর্মীয় প্রশ্ন-উত্তর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কুরবানীর টাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে ফতোয়া

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কুরবানীর টাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে ফতোয়া

।। আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন ।।

প্রশ্ন: বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য খাবার, বইপত্র ও চিকিৎসাসেবামূলক কিছু কাজ করার দাবি করে থাকে। মাঝে মাঝে তাদের এই ধরণের কাজের সচিত্র সংবাদও আমরা দেখতে পাই। তাদের কার্যক্রম হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধসহ সকল ধর্ম-বর্ণ এবং নারী-পুরুষের অবাধ অংশগ্রহণে পরিচালিত হয়।

কিশোর কুমার দাশ নামের একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী কর্তৃক বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ২০১৩ সালের ২২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৪ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম শাখা এবং সবশেষে ২০২১ সালে খাগড়াছড়িতে বিদ্যানন্দের দ্বাদশ শাখা চালু করা হয়। বর্তমানে দেশব্যাপী বিদ্যানন্দের মোট ১৭টি শাখা রয়েছে।

সংস্থাটির কার্যক্রম ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তর থেকে ব্যাপক সন্দেহ ও সংশয়মূলক উক্তি শোনা যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সংগঠনটি মূলত: একদিকে সেবার আড়ালে সুকৌশলে হিন্দুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠায় সুকৌশলে কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা, ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও চেতনাবোধ উৎখাত এবং ইসলাম অসমর্থিত নারী-পুরুষের অবাধ চলাচলে উৎসাহ দান অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন স্তরের জ্ঞানী-গুণি ও বিজ্ঞজনদের থেকে এমন সন্দেহও শোনা যায়, সংস্থাটি সেবার আড়ালে কার্যত: ভারতের চরম মুসলিমবিদ্বেষী গোঁড়া হিন্দুত্ববাদি বিজেপি সরকারের হয়ে বাংলাদেশে গোয়েন্দাবৃত্তির কাজেও লিপ্ত।

গত কয়েক বছর আছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কর্তৃক তাদের কথিত সেবামূলক কাজ পরিচালনার লক্ষে দেশের মুসলমানদের প্রতি যাকাতের অর্থ প্রদান করার আহ্বান জানালে দেশের বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরাম সর্বসম্মত ফতোয়া দিয়েছেন যে, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে যাকাত দেওয়া জায়েয হবে না।

চলতি কুরবানী মৌসুমে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন মুসলমান দাতাদের পক্ষ থেকে কুরবানী আদায়ের ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে। তাদের প্রচারণায় নানা স্লোগান ও পরিভাষা ব্যবহার করে মুসলিম সমাজে আগ্রহ তৈরি করা হচ্ছে। কুরবানী অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রতিদিন নানান ছিন্নমূল মানুষজন এবং গরু-ছাগলের ছবি দিয়ে ফেসবুকে নিত্যনতুন প্রচারণা চালাচ্ছে। কুরবানীর অর্থ সংগ্রহ নিয়ে তাদের মূল প্রচারণাটি নিম্নে তুলে ধরা হল-

“অসহায় মানুষদের জন্য হোক আপনার প্রিয় কুরবানী।
শুরু হয়ে গেছে আমাদের কুরবানীর প্রস্তুতি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমাদের দাতাদের কাছ থেকে অসহায় মানুষদের জন্য কুরবানীর আহবান আসছে।ইতিমধ্যে আমাদের কুরবানী টিম পশু কেনার জন্য নেমে পড়েছে।আপনার আমার চারপাশে বহু মানুষ আছে যারা চাইলেও কুরবানী দিতে পারেনা।ঈদের দিন আপনি হয়তো মজা করে গোস্ত খাচ্ছেন কিন্তু কেও দূর থেকে চেয়ে চেয়ে দেখছে ।অনেকে লজ্জায় হয়তোবা চাইতে পারছেনা ।
সে সব মানুষগুলোর জন্য প্রতিবারের মত এইবারো আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি কুরবানির কার্যক্রম। আপনিও চাইলে শরিক হতে পারেন এই মহতী কাজে।
আস্ত গরু – ৯৪,৪৩০ টাকা
গরুর এক ভাগ – ১৩,৪৯০ টাকা
ছাগল – ১৪,৯৮০ টাকা ।”

বাজারে নানা জাতের, সাইজের ও দামের গুরু ও ছাগল বিক্রয় হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটার দামের সাথে অন্যটার দামের কোন মিল থাকে না। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডশেন গণহারে আস্ত গরু ৯৪,৪৩০ টাকা, গরুর এক ভাগ- ১৩৪৯০ টাকা এবং ছাগল ১৪৯৮০ টাকা দাম ঘোষণা দিয়ে ঢালাওভাবে টাকা সংগ্রহ করছে। এ পর্যায়ে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কিশোর কুমার দাশের প্রতিষ্ঠিত এবং ব্যাপক সন্দেহ ও সংশয়যুক্ত সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে মুসলমানগণ ইসলামের অন্যতম নিদর্শন পবিত্র কুরবানী আদায়ের উদ্দেশ্যে টাকা দেওয়া জায়েয হবে কিনা? এতে দাতার জিম্মা থেকে কুরবানীর ওয়াজিব বিধান আদায় হবে কিনা? তাছাড়া পূর্ণ গরু, সাত ভাগের এক ভাগ গরুর অংশ ও আস্ত খাসির গড় দাম নির্ধারণ করে কুরবানীর টাকা ঢালাওভাগে কালেকশন করা জায়েয হবে কিনা? এই নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বর্তমানে ব্যাপক বিতর্ক চলছে।

বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটা ফতোয়া দেওয়া সময়ের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা।

জবাব ও শরয়ী সমাধান

حامدا ومصليا ومسلما أما بعد

কুরবানী নামায ও রোযার মতো আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে নির্ধারিত স্বতন্ত্র একটি ইবাদত। যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন- فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَ انْحَر অর্থাৎ ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন ও কুরবানী আদায় করুন’। (সূরা কাউসার, আয়াত : ২)।

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- قُلْ إِنَّ صَلَاتِيْ ونُسُكِيْ ومَحْيَايَ ومَمَاتِي لِلّٰه رَبِّ العَالَمِين অর্থাৎ- ‘আপনি বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য উৎসর্গিত’। (সূরা আনআম, আয়াত : ১৬২)।

অতএব, মৌলিকভাবে কুরবানীর সাথে গোশত বিতরণের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য নিজে গোশত খাওয়া বা অন্য কাউকে বিতরণ করা নয়; যেহেতু এটি কেবলই আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রণিত একটি ইবাদত, সে হিসেবে এর গোশত কারও জন্যই খাওয়া জায়েয না হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা বড়ই মেহেরবান। তাই তিনি এমন খুশির দিনের মেহমানদারী হিসেবে নিজে মেজবান হয়ে প্রথমত কুরবানী দাতাকে নিজের কোরবানীকৃত পশু থেকে খাওয়ার বৈধতা দিয়েছেন। এবং ইচ্ছা অনুযায়ী অসহায়-দরিদ্রদেরকে দান করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন।

কুরআনে মাজীদে ইরশাদ হয়েছে – فَكُلُوْا مِنْهَا وَاَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَ الْمُعْتَرَّ অর্থাৎ ‘তখন তার গোশত থেকে নিজেরাও খাও এবং ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তদেরকেও খাওয়াও এবং তাদেরকেও, যারা নিজ অভাব প্রকাশ করে না। (সূরা হজ্ব- ১৩৬)।

হাদীসে ইরশাদ হয়েছে- كُلُوْا وَادّخِرُوْا وَتَصَدّقُوْا অর্থাৎ ‘তোমরা (কুরবানীর গোশত থেকে) নিজে খাও, জমা করে রাখ এবং দান-খয়রাত কর’। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৭২; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৪৪২৬; মুআত্তা মালিক, হাদীস ২১৩৫)।

সুতরাং উল্লিখিত ফাউন্ডেশন কর্তৃক কুরবানীর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য থেকে সরে এসে জাতির সামনে এটাকে শুধুমাত্র গোশত বিলানোর কর্মসূচিতে রূপান্তর করাটা ইসলামের মেজাজ পরিপন্থী। অধিকন্তু প্রত্যেকেরই নিজ কুরবানী নিজ হাতে করা উত্তম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জে নিজ হাতে কুরবানী করেছিলেন। উপরন্তু খাইরুল কুরুন তথা নবী ও নবী পরবর্তী সাহাবা-তাবেয়ীদের যুগে ইসলামে এমন সম্মিলিত পদক্ষপে গোশত বিতরণ কর্মসূচির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

দ্বিতীয়ত “বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন” অমুসলিম এবং হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণার লোকজন দ্বারা পরিচালিত এমন একটি সংগঠন, যাদের জীবনাচার ও কর্মপন্থায় ইসলামী আদর্শ ও শরীয়ী বিধি-বিধান মেনে চলার প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ ও আনুগত্য দেখা যায় না। সুতরাং তাদের কাছে কুরবানীর মত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের দায়িত্ব অর্পণ করা, যা পরবর্তীতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় শরয়ী পদ্ধতিতে সম্পাদন হওয়া এবং উপযুক্ত প্রাপ্য ব্যক্তিদের কাছে গোশত পৌঁছানোর ব্যাপারে সন্দেহ ও সংশয় মুক্ত নয়। এতদসত্ত্বে তাদের উপর কুরবানীর এই গুরুদায়িত্ব ন্যাস্ত করা ইবাদতের প্রতি চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার নামান্তর। অথচ কুরআনে কারীমে ইবাদতের প্রতি উদাসীনদের ব্যাপারে কঠোর ধমকি এসেছে। ইরশাদ হয়েছে-فويل للمصلين، الذين هم عن صلاتهم ساهون، الذين هم يراءون، অর্থাৎ ‘ধ্বংস ঐ সকল মুসল্লীদের জন্য, যারা নামাজের ব্যাপারে উদাসীন এবং যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে’। (সূরা মাউন, আয়াত- ৪-৬)।

আরও পড়তে পারেন-

তাছাড়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কর্তৃক কোরবানীর পশুর গড় দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার কারণে ব্যাপারটা আরো ঘোলাটে ও সংশয়যুক্ত হয়ে ওঠেছে। কেননা স্বভাবতই প্রতিটি পশু একই দামের হওয়া অসম্ভব। সুতরাং ক্রয়ের ক্ষেত্রে পশুর দাম কম বেশি হলে অতিরিক্ত বা অবশিষ্ট অর্থ, কিংবা ঘাটতির ক্ষেত্রে আয় ব্যয় খাত কি হবে; সে বিষয়টাও অস্পষ্ট। যা উক্ত চুক্তি বাতিল হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

তৃতীয়ত এটি এমন একটি সংগঠন, যাদের বিরুদ্ধে ধর্মহীনতা এবং ইসলামবিদ্বেষী চিন্তা-চেতনা লালন ও প্রচারের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। যেমন, ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাশ প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে বলেছেন- “যে স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদেরও পার্থিব-অপার্থিব কোনো কিছু পাওয়ার আশায় কাজটা করা যাবে না”। (দৈনিক প্রথম আলো- ৩১ জানুয়ারি, ২০২১ইং)। এর মানে তারা পরকালের সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করেন না বলে স্পষ্ট স্বিকারোক্তি দিলেন।

সুতরাং কোরবানির মত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতের দায়িত্ব এমন ধর্মহীন নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণা লালনকারী সংগঠনের হাতে সোপর্দ করা কীভাবে জায়েয হতে পারে? অথচ এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- إنا لا نستعين في أمر ديننا بمن ليس على ديننا অর্থাৎ আমরা আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে এমন কারো সহযোগিতা নিতে পরি না, যে আমাদের দ্বীনের উপরে নেই। (আল মবসুত লিসসারাখসী ৪/১৪৬, মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস নং- ৩৩১৬২)।

চতুর্থত বিভিন্ন মহল ও ব্যক্তিবর্গের ধারণা মতে, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন বাহ্যিকভাবে নিজেদেরকে সেবা মূলক সংগঠন বলে প্রচারণা চালালেও এটি একটি হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্য চিন্তা চেতনাধারী সংগঠন। যার ভিতরগত কার্যক্রম ইসলাম বিদ্বেষী। সাধারণ জনগণ ও মুসলমানদের প্রতারিত করার জন্য এরা সেবার মুখোশ ধারণ করেছে মাত্র। উপরোক্ত ধারণা যদি বাস্তব সম্মত হয়, তাহলে তাদেরকে কুরবানীর জন্য টাকা দেওয়া কোনভাবেই শরীয়ত সম্মত নয়। বরং এ ধরণের ফাউন্ডেশন ও তার কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য। الله أعلم بالصواب

শরয়ী প্রমাণাদি

(1) ﴿یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ أَتُرِیدُونَ أَن تَجۡعَلُوا۟ لِلَّهِ عَلَیۡكُمۡ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینًا﴾ (النساء ١٤٤)

(2) سَمِعْت أبي وذَكَر حَديثًا رواه ابنُ وَهبٍ، عَنْ عَبدِ اللهِ بنِ السَّمْحِ، عن عُمَرَ بنِ صُبَيحٍ، عن خالِدِ بنِ مَيمونٍ، عن يُونُسَ بنِ عُبَيدٍ، عن الحَسَنِ، عن جابِرِ بنِ عَبدِ اللهِ أنَّهم قالوا: يا رَسولَ اللهِ، إنَّ المُشرِكينَ يتسَرْولون ولا يأتَزِرون؟ قال: فتَسَرْوَلوا أنتم واتَّزِروا، قالوا: وإنَّ المُشرِكين يتخَفَّفون ولا ينتَعِلون؟ قال: فتخَفَّفوا أنتم وانتَعِلوا، وخالِفوا أولياءَ الشَّيطانِ بكُلِّ ما استطَعْتُم.

الراوي: جابر بن عبد الله • أبو حاتم الرازي، علل ابن أبي حاتم (١٤٥٥) • عُمَرُ بنُ صُبَيحٍ وخالِدُ بنُ مَيمونٍ خُراسانيَّانِ

(3) مَطْلَبٌ لَا يَجُوزُ اتِّخَاذُ الْكَافِرِ فِي وَلَايَةٍ (قَوْلُهُ: هُوَ حُرٌّ مُسْلِمٌ) فَلَا يَصِحُّ أَنْ يَكُونَ عَبْدًا لِعَدَمِ الْوَلَايَةِ وَلَا يَصِحُّ أَنْ يَكُونَ كَافِرًا؛ لِأَنَّهُ لَا يَلِي عَلَى الْمُسْلِمِ بِالْآيَةِ بَحْرٌ عَنْ الْغَايَةِ وَالْمُرَادُ بِالْآيَةِ قَوْله تَعَالَى ﴿وَلَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلا﴾ [النساء: ١٤١] (قَوْلُهُ: بِهَذَا إلَخْ) أَيْ بِاشْتِرَاطِ الْإِسْلَامِ لِلْآيَةِ الْمَذْكُورَةِ، زَادَ فِي الْبَحْرِ وَلَا شَكَّ فِي حُرْمَةِ ذَلِكَ أَيْضًا اهـ: أَيْ لِأَنَّ فِي ذَلِكَ تَعْظِيمَهُ وَقَدْ نَصُّوا عَلَى حُرْمَةِ تَعْظِيمِهِ بَلْ قَالَ فِي الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ وَمَا وَرَدَ مِنْ ذَمِّهِ أَيْ الْعَاشِرِ فَمَحْمُولٌ عَلَى مَنْ يَظْلِمُ كَزَمَانِنَا وَعُلِمَ مِمَّا ذَكَرْنَاهُ حُرْمَةُ تَوْلِيَةِ الْفَسَقَةِ فَضْلًا عَنْ الْيَهُودِ وَالْكَفَرَةِ. اهـ.

قُلْت: وَذَكَرَ فِي شَرْحِ السِّيَرِ الْكَبِيرِ أَنَّ عُمَرَ كَتَبَ إلَى سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ وَلَا تَتَّخِذْ أَحَدًا مِنْ الْمُشْرِكِينَ كَاتِبًا عَلَى الْمُسْلِمِينَ، فَإِنَّهُمْ يَأْخُذُونَ الرِّشْوَةَ فِي دِينِهِمْ وَلَا رِشْوَةَ فِي دِينِ اللَّهِ تَعَالَى قَالَ وَبِهِ نَأْخُذُ فَإِنَّ الْوَالِيَ مَمْنُوعٌ مِنْ أَنْ يَتَّخِذَ كَاتِبًا مِنْ غَيْرِ الْمُسْلِمِينَ ﴿لا تَتَّخِذُوا بِطَانَةً مِنْ دُونِكُمْ﴾ [آل عمران: ١١٨] . اهـ. (قَوْلُهُ: لِمَا فِيهِ مِنْ شُبْهَةِ الزَّكَاةِ) أَيْ وَهُوَ مِنْ جُمْلَةِ الْمَصَارِفِ، فَيُعْطَى كِفَايَتَهُ مِنْهُ نَظِيرَ عَمَلِهِ وَلِذَا لَوْ هَلَكَ مَا جَمَعَهُ لَا شَيْءَ لَهُ كَمَا صَرَّحَ بِهِ فِي الزَّيْلَعِيِّ، فَكَانَ فِيهِ شَبَهُ الْأُجْرَةِ وَشَبَهُ الصَّدَقَةِ. (رد المحتار- 2/309)

(4) قال: ويستحب له أن يذبح هديه أو أضحيته بيده لما روي { أن النبي صلى الله عليه وسلم ساق مائة بدنة في حجة الوادع فنحر نيفا وستين بنفسه وولى الباقي عليا رضي الله عنه} ، وفي هذا دليل على أن الأولى أن يذبح بنفسه ، فأما إذا لم يقدر على ذلك ، ولم يهتد لذلك فلا بأس بأن يستعين بغيره ; لأن فعل الغير بأمره كفعله بنفسه .

قال: ولا أحب أن يذبحه يهودي أو نصراني ; لأن هذا من باب القربة فلا يستعان فيه بالكافر قال : صلى الله عليه وسلم : {إنا لا نستعين في أمر ديننا بمن ليس على ديننا} (المبسوط للسرخسي ٤/١٤٦)

(5) وَإِذَا كَانَ مَجْهُولًا جَهَالَةً فَاحِشَةً. فَلَا تَكُونُ هَذِهِ الْوَكَالَةُ صَحِيحَةً وَلَوْ بَيَّنَ الثَّمَنَ. كَالتَّوْكِيلِ فِي اشْتِرَاءِ الثَّوْبِ وَالدَّابَّةِ. (درر الحكام في شرح مجلة الأحكام ٣/‏٥٧٥ — علي حيدر)

– আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, মুহাদ্দিস, মুফতি, মুফাসসির এবং সহযোগী পরিচালক- আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

[দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন]