রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে (সাইফার) দায়ের করা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক- ই- ইনসাফের (পিটিআই) সাবেক চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে জামিন দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন ও ডেইলি জংগ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সরদার তারিক মাসুদের নেতৃত্বে বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ এবং সৈয়দ মনসুর আলী শাহের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ পিটিআইয়ের এই দুই শীর্ষ নেতার প্রত্যেককে ১০ লাখ রুপির জামানত জমা দেয়ার বিপরিতে এ রায় দেন।
চলতি বছর ২৩ অক্টোবর ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশিকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে (সাইফার) দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
ইমরান খান তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের প্রমাণ হিসেবে একটি তারবার্তা ফাঁস করতে চেয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বলছে, ওই তারবার্তার মাধ্যমে ইমরান প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ষড়যন্ত্র করে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইমরানের ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।
আরও পড়তে পারেন-
- ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামের নির্দেশনা
- কিশোর অপরাধ রোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
- আদর্শ পরিবার গঠনে যে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরী
- ইসলামে সামাজিক সম্পর্ক এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার গুরুত্ব
- মানুষ মারা যাওয়ার পর, তাঁর আত্মার কি হয় ?
ইমরান খানের আইনজীবীরা বলছেন, এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের মক্কেলের সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের সাজা স্থগিতের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। এর ফলে দেশটির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ আগস্ট আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তার রাজনীতির ওপর ৫ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ইসলামাবাদের জজ আদালত। এর ফলে তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য তিনি সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য হয়ে পড়েন। রায় ঘোষণার পর লাহোরের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় ইমরান খানকে। বর্তমানে তিনি আদিয়ালা জেলে বন্দী।
তবে ২৯ আগস্ট জজ আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাই কোর্ট (আইএইচসি)। তবে এখন অন্যান্য মামলা থাকায় ইমরান কারাগারেই আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্যে গোপন তথ্য ফাঁসের মামলায়ও দণ্ড পেলে আর কখনোই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীরা শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হওয়ার আগের দিন ইমরান খানের আপিল খারিজ করে দেয়া হলো।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে সন্ত্রাস, সহিংসতা, ব্লাসফেমি, দুর্নীতি এবং হত্যার মতো ১৪০টিরও বেশি মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন ইমরান খান।
সূত্র : জিও নিউজ ও ডন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ