।। আলহাজ্ব সৈয়দ জহির উদ্দীন ।।
জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। এই দিনে আছে বিশেষ ইবাদত ও আমল। এই দিনে আছে এমন মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন মহান আল্লাহ বান্দার যাবতীয় দোয়া কবুল করেন। বান্দা তখন আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তা-ই দান করেন।
তবে সেই সময় খুব সীমিত। আবু হুরায়রা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার দিন সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তাতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলিম বান্দা সালাতরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে অবশ্যই তিনি তাকে তা দান করেন। কুতায়বা (রাযি.)এর বর্ণনায় আরো আছে, তিনি তাঁর হাত দ্বারা মুহূর্তটির স্বল্পতার প্রতি ইঙ্গিত করেন। (সহীহ মুসলিম, হাদিস- ১৮৫৪)।
দোয়া কবুলের এই মাহেন্দ্রক্ষণ কখন, তা নির্ধারণ করা নিয়ে একাধিক অভিমত আছে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
সর্বাধিক বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে দুটি-
প্রথম অভিমত হলো, জুমার দিন দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত হলো, ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে বসা থেকে জুমার সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত। এ অভিমতের দলিল হলো, হাদিসে এসেছে, আবু মুসা আল আশআরি (রা.) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি তোমার পিতাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছ? বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ইমামের বসা থেকে সালাত শেষ করার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সেই মুহূর্ত আছে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস- ১৮৬০)।
দ্বিতীয় অভিমত হলো, জুমার দিন দোয়া কবুলের মাহেন্দ্রক্ষণ হলো আসরের পর।উভয় অভিমতের মধ্যে এটি সর্বাধিক প্রাধান্যযোগ্য। এটি আবদুল্লাহ বিন সালাম (রা.), জাবের (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.)-এর উক্তি এবং ইমাম আহমাদ (রহ.)সহ অনেকের অভিমত। এ অভিমতের পক্ষে দলিল হলো, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্ত তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস- ১০৪৮)।
এখানে উল্লেখ্য, জুমার দিন বিশেষ সময়ে দোয়া কবুল হওয়া প্রসঙ্গে কোনো কোনো হাদিসে সালাতরত অবস্থায় দোয়া করার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু আসরের পর সালাত না থাকায় আলোচ্য হাদিসের মূল উদ্দেশ্য পরবর্তী সালাতের জন্য অপেক্ষায় থাকা। ওই অবস্থায় দোয়া কবুল হয়। কেননা সালাতের জন্য অপেক্ষারত থাকলে সালাতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। (দেখুন, তিরমিযী, হাদিস- ৪৯১)।
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ
উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com
দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।