।। ইফতিখার জামিল ।।
রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না, প্রশ্ন হচ্ছে ধর্মের অনুসারীদের কি রাষ্ট্র থাকতে পারে না?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একসময় ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুদান ও প্রণোদনা দান নিষিদ্ধ ছিল। গত কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট তিনটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ক) ধর্মীয় শিক্ষাদানে আগ্রহী পরিবার ও প্রতিষ্ঠানে সমানভাবে রাষ্ট্রীয় সুবিধা, অনুদান ও প্রণোদনা দিতে হবে। খ) ধর্মীয় স্কুলগুলো চাইলে তাদের নিজস্ব বিশ্বাস পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত রাখতে পারে। যদিও ‘লিবারেল’ দৃষ্টিতে সেগুলো বৈষম্যমূলক হয়, তবুও বাঁধা দেওয়া যাবে না। ( বাংলাদেশে স্কুলে পাঠ্যক্রমের বাইরের বই পড়ানো নিষিদ্ধ।) গ) ধর্মীয় স্কুল তাদের চিকিৎসা বীমায় গর্ভপাতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
বাংলাদেশের সেকুলাররা যখন বলেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার — তখন এতে অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িত থাকে। এর মানে হচ্ছে, ধর্মীয় পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও প্রণোদনা ভোগ করবে না ও সেকুলাররা একচেটিয়াভাব রাষ্ট্রীয় অনুদান ও প্রণোদনা ভোগ করবে। অর্থাৎ আপনি ভ্যাট ও ট্যাক্স দিবেন সমান, কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সেকুলার প্রতিষ্ঠান ও মূল্যবোধে স্পেন্ডিং ও খরচ বেশী হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকুলারিজম কেন্দ্রিক বিভাগের সংখ্যা বাড়বে।
অর্থাৎ সেকুলারিজমের তর্কটা নিছক আদর্শের বিতর্ক নয়। একইভাবে পাবলিক-প্রাইভেটের বিতর্কও বটে। কোনকিছুকে প্রাইভেট বানিয়ে দেবার মানে রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা। সার্বজনীন বানানোর মানে একে পাবলিক গুডসে রুপান্তরিত করা। ফান্ড যোগান দেওয়া ও আইনি বৈধতা পাওয়া। বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রা সরকারি নিরাপত্তা, সাহায্য ও বৈধতা পায়। বিরোধিতা করলে গ্রেফতারের আশংকা থাকে। এসব কিছুর পেছনে আছে সেকুলারদের ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার বিতর্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের রায়গুলো দেখতে পারেন :ওরা বলবে, রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না, আমরা প্রশ্ন করবো ধর্মের অনুসারীদের কি রাষ্ট্র থাকতে পারে না?