।। মাওলানা নূর হোসাইন ।।
প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) কে পরীক্ষা করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা একদিন স্বপ্নে দেখান সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার। এই স্বপ্ন দেখে গভীর চিন্তায় পড়ে গেলেন ইব্রাহীম (আ.)। কারণ তাঁর সবচেয়ে প্রিয়-তো স্বীয় পুত্র ইসমাইল। তবুও তো রবের নির্দেশ। পালন করতেই হবে। তাই পিতা পুত্রের নিকট বিষয়টি বর্ণনা করে জানতে চাইলেন- বৎস! এব্যাপারে তোমার অভিমত কি? প্রতিত্তোর দিলেন পুত্র। হে আমার পিতা- ‘আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন।’ আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন, ইনশাআল্লাহ।
এরপর ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে আদরের ছেলে ইসমাইলকে কোরবানি করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।
হযরত ইসমাইল (আ.)এর পরিবর্তে ও হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমা স্মরণে মুসলমানরা প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় তার পথে পশু কোরবানি করেন।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
ঈদুল আযহার এই দিনটি আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। মুসলিম উম্মাহ গোটা বিশ্বজুড়ে এ দিনে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য হাসিলের জন্য পশু কোরবানি করে থাকে। এই কোরবানি কোন আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং প্রকৃত রূপ হলো মনের গভীরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা; তাকওয়া নিয়ে প্রিয় বস্তু তাঁর নামে উৎসর্গ করা, যা মূলত স্রষ্টার উদ্দেশ্যে সৃষ্টির নজরানা। একমাত্র সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশেই পশু কোরবানি হতে হবে, তার সন্তুষ্টি অর্জনই হতে হবে একমাত্র লক্ষ্য।
তাই আসুন, আমরা লোকদেখানো কোরবানি না করে নিজেদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা পশুত্বের কোরবানি দিই। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক: শিক্ষক, আলহাজ্ব আব্দুল মালেক মাতব্বর ইসলামিয়া মাদরাসা, খিলক্ষেত, লেকসিটি, ঢাকা।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ